আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলগুলোকে নিয়ে যুগপৎ কর্মসূচির পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। তবে মাঠে নামার আগেই সে পরিকল্পনা ক্ষমতাসীনরা ভেস্তে দিতে চায় বলে ধারণা করছেন দলটির নেতারা। এ কারণেই সাম্প্রতিক আন্দোলনগুলোতে বাধা ও হামলা করা হচ্ছে বলে ধারণা করছেন তারা।
বিএনপির দাবি, গত ২৫ দিনে ২২-২৫টি স্থানে ১৪৪ ধারা, বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে অন্তত ৫০টি স্থানে হামলা এবং ২৭টি স্থানে ভাঙচুরের শিকার হয়েছেন দলের নেতাকর্মীরা। দলটির অভিযোগ, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুর-১০ এলাকায় ক্ষমতাসীন দলের অনুসারী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধা ও হামলায় পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ করতে পারেনি তারা।
বিএনপির কোনও কোনও নেতা মনে করেন, সরকারপ্রধানের পক্ষ থেকে বিরোধী দলের কর্মসূচিতে বাধা না দেওয়ার বিষয়টি পরিষ্কার করা হলেও এসব হামলায় সরকারের ভেতরকার অস্থিরতার ছাপ স্পষ্ট। যদিও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা দাবি করেছেন, সরকারের অবস্থান প্রধানমন্ত্রী যেমনটি বলেছেন, তেমনিই আছে। বরং অভ্যন্তরীণ গৃহদাহের কারণে বিএনপির লোকেরা নিজেরাই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছেন।
বিগত দিনে সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় হামলা-মামলা হলেও ব্যতিক্রম ছিল রাজধানী। যদিও গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকার বিক্ষোভগুলোতেও বাধা পাচ্ছে বিএনপি। দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘বিএনপি দেশে গণতন্ত্র ফেরানোর চেষ্টা করছে। দেশে ভোটের অধিকার ফেরানোর জন্য সবাইকে নিয়ে ঐকমত্য প্রচার করছে। মাসখানেক ধরে কর্মসূচি পালন করছে।
এসব কর্মসূচিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বাধা দিচ্ছে। যেখানে তারা প্রতিরোধের মুখে পড়ছে, সেখানে পুলিশ সহায়তা করছে। শামসুজ্জামান দুদু মনে করেন, এসব হামলায় বিএনপির পক্ষে দেশে জনমত সৃষ্টি হচ্ছে। চূড়ান্তভাবে এই আন্দোলন যুগপৎ ধারায় যাবে।
বিএনপির এক দায়িত্বশীল বলছেন, প্রথমত ভয় দেখিয়ে কর্মীদের মাঠছাড়া করতে এসব হামলা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, আগামী দিনে যুগপৎভাবে রাজপথে নামবে বিএনপি। এই সমন্বিত কর্মসূচির আগে সব দলে ভীতি সৃষ্টি করতেই বাধা দেওয়া হচ্ছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এরইমধ্যে প্রশ্ন তুলেছেন, সরকারপ্রধান বিরোধী দলের কর্মসূচি নির্বিঘ্ন করার নির্দেশনা দিলেও বাধা আসছে।
যদিও আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, সরকারের অবস্থান অপরিবর্তনীয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ‘নেত্রীর যে অবস্থান ছিল, আমরা সে অবস্থানেই আছি, সেই অবস্থান বহাল আছে। তাদের ওপর কোনও হামলা হয়নি। মিরপুরে যেটি হয়েছে, সেটি বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল।
পাঠকের মতামত